দৈনিক প্রত্যয় ডেস্কঃ বাংলা ছায়াছবির প্লেব্যাক সম্রাট এন্ড্রু কিশোরের শেষযাত্রার কর্মসূচি চূড়ান্ত করেছে তার পরিবার। এন্ড্রু কিশোরের স্ত্রী লিপিকা, বোন শিখা বিশ্বাস, ভগ্নিপতি ডা. প্যাট্রিক বিপুল বিশ্বাসসহ পরিবারের সব সদস্য ও শিল্পীর স্বজনরা মিলে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন আগামী ১৫ জুলাই সকালে প্রথমে তাকে রাজশাহী শহরের একটি চার্চে নেওয়া হবে। এরপর শিল্পীর ইচ্ছানুযায়ী তাকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে নেওয়া হবে। বর্তমানে এই শিল্পীর মরদেহ রাজশাহী হাসপাতালের হিমঘরে রাখা হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কণ্ঠশিল্পী মোমিন বিশ্বাস।
মোমিন বিশ্বাস বলেন, স্থানীয় চার্চে নেওয়ার পর ধর্মীয় রীতি পালন করার পর ১১টা থেকে এক ঘণ্টা ভক্ত শুভাকাঙ্ক্ষীদের শ্রদ্ধা জানানোর জন্য শহীদ মিনারে রাখা হবে তার মরদেহ। রাবি শহীদ মিনারে শেষ শ্রদ্ধার ফুলে সাজবেন এন্ড্রু কিশোর। এরপর তাকে নিয়ে আসা হবে রাজশাহীর কালেক্টরেট মাঠের পাশে খ্রিষ্টানদের কবরস্থানে। সেখানে বাবা-মায়ের কবরের পাশেই তাকে সমাহিত করা হবে।
এন্ড্রু কিশোরের শিষ্য মোমিন বিশ্বাস আরো বলেন, ‘আমরা বৃহস্পতিবার (৯ জুলাই) আলোচনা করি দাদার শেষ যাত্রার বিষয়ে। আমাকে এ বিষয়গুলো জানিয়েছেন বউদি (এন্ড্রু কিশোরের স্ত্রী লিপিকা)। দাদার স্ত্রী সবার কাছে আবেদন করেছেন যেন সবাই সামাজিক দূরত্ব মেনে শ্রদ্ধা জানাতে আসেন। করোনার ভয়াবহতা সম্পর্কে সবার গুরুত্ব দেওয়া উচিৎ।’
এদিকে বাবাকে শেষবারের মতো বিদায় দিতে অস্ট্রেলিয়া থেকে দেশে এসে পৌঁছেছেন তার ছেলে এন্ড্রু সপ্তক। বৃহস্পতিবার দেশে ফিরেছেন তিনি। এখন অপেক্ষা শিল্পীর মেয়ে এন্ড্রু সঙ্গার জন্য। তিনি ১৩ তারিখে দেশের উদ্দেশ্যে রওনা দেওয়ার কথা। জানা গেছে, তার দেশে ফিরতে আরও চার দিন সময় লাগতে পারে! যদি তার দেশে এসে পৌঁছানো সম্ভব হয় তাহলে বরেণ্য এই গায়কের শেষযাত্রার কাজ ১৫ জুলাই এর পরিবর্তে আগেও সম্পন্ন হতে পারে।
বাংলাদেশের জনপ্রিয় এই গায়ক রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্যবস্থাপনা বিষয়ে পড়াশোনা শেষ করে ১৯৮০ সালের জানুয়ারি মাসে ঢাকা চলে আসেন। বরাবরই শত ব্যস্ততার মধ্যে ছুটে যেতেন তার প্রিয় শহরে। কোনো আয়োজনে ডাক পড়লেই ছুটে আসতেন।
প্রসঙ্গত, গেল বছরের সেপ্টেম্বর থেকে ক্যান্সারে (নন-হজকিন লিম্ফোমা) আক্রান্ত হয়ে সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন ছিলেন এন্ড্রু কিশোর। দীর্ঘ ৯ মাস চিকিৎসাধীন এন্ড্রু কিশোর ১১ জুন রাতে একটি বিশেষ ফ্লাইটে দেশে ফেরেন। তারপর মিরপুর বাসায় থাকার পর রাজশাহী নিজ গ্রামে চলে যান। তারপর থেকে সেখানে তার বোনের বাসা সংলগ্ন ক্লিনিকেই ছিলেন। সবাইকে কাঁদিয়ে ৬ জুলাই সন্ধ্যা ৬টা ৫৫ মিনিটে না ফেরার দেশে চলে গেছেন গানের সম্রাট।
ডিপিআর/ জাহিরুল মিলন